আত্মীয়দের দিয়ে কমিটি না হওয়ার সম্ভাবনা
সমসাময়িক প্রতিবেদন
২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০
আওয়ামী লীগ সভাপতির কঠোর অবস্থানের পরও জেলা কমিটিতে প্রস্তাব করা হয়েছে বিতর্কিতদের নাম। আত্মীয়দের দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ জেলা থেকে পূর্ণাঙ্গ কমিটির প্রস্তাব এসেছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এই কমিটি যাচাই বাছাই করতে গিয়ে দেখছেন বেশ কিছু জেলাতে আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা মানা হয়নি। এই কমিটি গুলোতে বিতর্কিত, অনুপ্রবেশকারী, স্বাধীনতাবিরোধি এবং জেলা কমিটির সভাপতির নিকটাত্মীয়দের নাম পাওয়া গেছে। এছাড়া যাদের বিরুদ্ধে জেলায় সন্ত্রাস, টেন্ডারবাজির অভিযোগ আছে, মামলা হয়েছে। এ রকম বেশ ক’জনের নাম আছে একাধিক জেলা থেকে পাঠানো প্রস্তাবিত তালিকায়।
আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা কমিটির নাম প্রস্তাবের সুনির্দিষ্ট গাইড লাইনে বলা হয়েছিল, ২০০৮ এর পর আওয়ামী লীগে যোগদানকারীদের জেলা কমিটিতে নেয়া যাবে না। কিন্তু বেশ কিছু জেলায় এই নীতি অনুসৃত হয়নি। অনেক জেলায় বিএনপি থেকে ২০১৫ সালে যোগদানকারীদেরও জেলা কমিটিতে রাখা হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে এবার কঠোর নির্দেশনা ছিলো যে, আত্মীয়দের কমিটিতে রাখা যাব না। এই নির্দেশনা সবচেয়ে বেশি লঙ্ঘিত হয়েছে। অন্তত ২০টি জেলায় কমিটিতে সভাপতিরা তাদের নিজের আত্মীয়-স্বজনকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। একটি জেলায় পরিবারের পাঁচ সদস্যকে ঢোকানো হয়েছে।
তবে জেলা সভাপতি নাম পাঠালেই চুড়ান্ত হয়ে গেল না। কেন্দ্রিয় কমিটি যাচাই-বাছাই করবে। এরপর দলের সভাপতি দেখবেন। তারপর কমিটি দেয়া হবে। জেলায় সভাপতির প্রস্তাবিত তালিকা পুরোটা বাতিল করার ক্ষমতা দলের সভাপতির আছে। কমিটি অনুমোদন দেবেন তিনিই। আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছে, জেলা কমিটি, অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কমিটি, কিংবা উপ-কমিটি যে কমিটিই হোক না কেন উপযুক্ত যাচাই ছাড়া কোনটাই অনুমোদন দেয়া হবে না। আর এই যাচাই হবে কয়েক ধাপে।
প্রথম ধাপঃ যারা কমিটির নাম প্রস্তাব করবেন প্রথম এবং প্রধান দায়িত্ব তাদের। তারা দেখবেন, বিতর্কিত কারো নাম তারা প্রস্তাবিত তালিকায় দিচ্ছেন কিনা।
দ্বিতীয় ধাপঃ প্রস্তাবিত তালিকা দলের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক দেখবেন। বিতর্কিত কারো নাম থাকলে তা চিহ্নিত করবেন।
তৃতীয় ধাপঃ সম্পাদকমন্ডলীর সভায় এটি বিচার বিশ্লেষণ করা হবে।
চতুর্থ ধাপঃ আওয়ামী লীগ সভাপতি এই তালিকা যাচাইয়ের জন্য গোয়েন্দা সংস্থা গুলোকে দেবেন এবং তারা এ সম্পর্কে রিপোর্ট দেবেন।
পঞ্চম ধাপঃ পাঁচ নেতা গোয়েন্দা রিপোর্টের পর পুনঃনিরীক্ষা করে চুড়ান্ত প্রস্তাবিত তালিকা আওয়ামী লীগ সভাপতিকে দেবেন।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, যে পাঁচ নেতা শেষ দফায় এই তালিকা খতিয়ে দেখবেন, তাদেরকে পুরো কার্যক্রম তদারকির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এই পাঁচ নেতা হলেন দলের সাধারণ-সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্ণেল (অবঃ) ফারুক খান, প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম। আওয়ামী লীগ সূত্রে আরও জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি সুস্পষ্ট ভাবে বলে দিয়েছেন একজন অনুপ্রবেশ কারীও যেন এবার কমিটিতে জায়গা না পায়।